রাজ্যের ছোট পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ইনডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্টস্ অ্যাসোসিয়েশন


আলেফা বেগম : কলকাতায় শনিবার, ২০ জুলাই  ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্টস্ অ্যাসোসিয়েশন এর বার্ষিক রাজ্য সন্মেলনে সরকারের কাছে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃত দপ্তর অনুমোদিত ছোট পত্রপত্রিকায় নিয়মিত বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি প্রবীণ সাংবাদিকদের পেনশন বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে। 
এদিন সম্মেলনের শুরুতে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন শ্রাবন্তী কলাকেন্দ্রর প্রধান মন্দিরা রাহা। তিনি পরিবেশন করেন রবীন্দ্র সঙ্গীত "আলোকের এই ঝর্ণা ধারায় ধুইয়ে দাও"। পরে প্রদীপ জ্বালিয়ে এই বার্ষিক রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রোটারি ক্লাবের ডিস্ট্রিক্ট গভর্ণর ডাঃ অমিতাভ চক্রবর্তী, ডাঃ কৃষ্ণেন্দু গুপ্ত, বিশিষ্ট আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, সংগঠনের সভাপতি বরিষ্ঠ সাংবাদিক শ্যামোলেন্দু মিত্র, সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাজাহান সিরাজ, সহ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ও  অমর নস্কর। 
এই সন্মেলনে আলোচনার বিষয় ছিলো "ভারতের সংবিধান কি বিপন্ন ?" এই বিষয় আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'ইন্ডিপেনডেন্ট' শব্দটা খুবই আপেক্ষিক। একসময় হিকি সাহেব যখন পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন তিনিও বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। আজও একজন সাংবাদিককে রাষ্ট্রশক্তি বা শাসক দলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে খবর করতে গিয়ে চক্ষুশূল হতে হয় 
শাসক দলের। আসলে সাংবিধানিক নৈতিকতার সর্ম্পকে আমরা উদাসীন। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ তার জ্বলন্ত উদাহরণ। তবে আমাদের দেশের সংবিধান বিপন্ন নয় বলে আজও কথা বলতে পারছি আমরা। বর্তমান সময়ে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড বা ডিজিটাল মিডিয়া এখন আন্তর্জাতিক। কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক স্নেহাশিস শূর  বলেন, কেন্দ্রীয় স্তরে এখন ডিজিটাল সাংবাদিকতায় অনেক নিয়ম এসেছে। এমনকি ফৌজদারি আইন তৈরি হয়েছে। বিনা প্রমাণে যাকে তাকে নিয়ে যা খুশি নিউজ করা যাবে না। তা সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
 এই আলোচনায় অংশ নেন প্রাক্তন সাংসদ, সাংবাদিক ও পুবের কলম দৈনিকের সম্পাদক আহমেদ হাসান ইমরান। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হলেন সাংবাদিকরা। তিনি সাংবাদিকদের সঠিক পথে থেকে সঠিক খবর করার পরামর্শ দেন। সম্মেলনে বরিষ্ঠ  সাংবাদিক প্রসূন আচার্য, কল্যাণ মৈত্র, রজনী মুখার্জী, সীতারাম আগরওয়াল, অমর নস্কর, আরিফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 
ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজাহান সিরাজ বলেন, সরকারের কাছে আমাদের সংগঠনের বেশ কিছু দাবি দাওয়া রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম --- 

১। রাজ্যের প্রতিটি মহকুমায় আরএনআই স্বীকৃত এবং জেলা তথ্য ও সংস্কৃত দপ্তর অনুমোদিত পাক্ষিক ও সাপ্তাহিক সংবাদ পত্র- পত্রিকাগুলোকে একটি করে এ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের অনুমোদন দেওয়া।

২। সাংবাদিকদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় পুরনো মাভৈ কার্ডের মত আলাদা স্বাস্থ্যকার্ড দেওয়া।

৩। জেলার অনুমোদিত পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত বিজ্ঞাপন দেওয়ার পাশাপাশি মান্ধাতা আমলের বিজ্ঞাপনের 'রেট' পরিবর্তন।

৪। পঞ্চায়েত এবং পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজের বিজ্ঞাপন স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় অগ্রাধিকার দেওয়া।

৫। সোশ্যাল মিডিয়াকে সঠিকভাবে অনুসন্ধান করে, তাদের প্রশিক্ষণ এবং সরকারি স্বীকৃতি প্রদান করা।

৬। কর্মরত সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেওয়া।

৭। জেলার সাংবাদিকদের সরকারি আবাসন প্রকল্পে ঘর দেওয়া নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাংবাদিক সংগঠনগুলিকে আবাসন প্রকল্পে জেলা সদরের কাছাকাছি কো-অপারেটিভ‌ -এর মাধ্যমে জমি প্রধান প্রদান।

৮। সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য জেলার প্রতিটি মহকুমা ও পৌরসভা লাগোয়া একটি করে প্রেস কর্ণারের ব্যবস্থা।

৯। সরকারিভাবে জেলার সাংবাদিকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা।

১০। প্রবীণ সাংবাদিকদের মাসিক পেনসন বৃদ্ধি ইত্যাদি। 

পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দেশের প্রবীণ নাগরিক এবং সাংবাদিকদের রেলের পুরানো সুযোগ সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

এই দিনের এই বার্ষিক রাজ্য সন্মেলনে সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি আমন্ত্রিত ছিলেন দক্ষিণ কলকাতার বিবেকানন্দ কলেজ এবং মহেশতলা কলেজের মাস কমিউনিকেশন অফ জার্নালিজমের বেশ কিছু ছাত্র ছাত্রীরা।

Comments

Popular posts from this blog

পূর্ব ভারতেও এখন উপলব্ধ এনলার্জড প্রোস্টেটের সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি - রেজাম ওয়াটার ভেপার থেরাপি

The Times Of India prestigious 7th edition Business award

জাগো ইন্ডিয়া জাগো ফিটনেস ক্যাম্পেইন – আর নয় অজুহাত, এবার ফিটনেসে মন দাও